ভাইয়া আমি জানি না কীভাবে সমস্যাটি আপনাকে বোঝাবো। আমার গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা। আমার বয়স ২৫ বছর। আমার বিয়ে হয়েছে পাঁচবছর। আমার বিয়ের পর থেকেই আমি আমার গায়ের রঙ নিয়ে বিষণ্ণ। কারণ আমার স্বামী আমার গায়ের রঙ নিয়ে অনেক কথা শোনায়। আমি জানি সে আমার এই রঙ পছন্দ করে না।
আমার শ্বশুরবাড়ির সবাই ফর্সা। আমার মন সবসময় খারাপ হয়ে থাকে এজন্য। আমি জানি একজন শিক্ষিত মেয়ের জন্য এ ব্যপারে মন খারাপ করে থাকা একেবারেই বোকামি। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে আমার জীবন এখন এরকম। আমি জানি না এর সমাধান কী হতে পারে। কারো সঙ্গে শেয়ারও করতে পারি না। অনুগ্রহ করে কোনো একটি সমাধান দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন। আমি আর পারছি না। আমি আমার জীবন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।
![](https://i0.wp.com/answers.priyo.com/sites/default/files/styles/large/public/201604/IMG_1204-2.jpg)
উত্তরঃ
সত্যি কথা বলি আপু, আপনার সমস্যাটি শুনতে যত সামান্য মনে হচ্ছে, আসলে কিন্তু মোটেও সামান্য নয়। গায়ের রঙ নিয়ে বা শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে কথা শোনানো, এটা দাম্পত্য জীবনে একটা প্রচণ্ড সিরিয়াস ইস্যু। আমি তো বুঝতে পারছি না যে আপনি একজন শিক্ষিতা মেয়ে হয়ে এই অপমান এত দিন কীভাবে সহ্য করেছেন!
যাই হোক আপু, আপনার বয়স মাত্র ২৫ এবং যেহেতু ছেলেমেয়ের কথা লেখেন নি, আমি ধরে নিচ্ছি আপনি এখনো মা হননি। ইন দিস কেস, আপনার অসম্ভব মানসিক কষ্টের কথা বিবেচনায় রেখে বলছি যে আপনি নিজের জন্য নতুন ভাবে চিন্তা করুন। আপনার ত্বকের রঙ শ্যামলা বলে যে পুরুষ আপনাকে ভালবাসবে না বা সম্মান দেবে না, সেই মানুষের সাথে জীবন কাটানোর চিন্তা করা অর্থহীন। তাছাড়া আপু, আমাদের দেশের মানুষের এই ধারণাই নেই যে ত্বকের রঙ নিয়ে কথা বল অশালীনতা!
আপনি যা করতে পারেন, আপনার স্বামীর সাথে সরাসরি কথা বলুন। সরাসরি মানে একদম বোল্ড ভাবেই। তাঁকে স্পষ্ট করে বলুন যে তাঁর এসব কথাবার্তায় আপনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করছেন , অপমানিত বোধ করছেন এবং এই অপমান আপনি আর সইতে পারছেন না। এবং তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করুন যে তিনি কী চান। তাঁর যদি মনে হয় যে একজন ফর্সা জীবনসঙ্গিনী হলেই তিনি বেশি ভালো থাকবেন, তাহলে এমন স্বামীকে ট্যাগ করাই উত্তম আপু। আর স্বামী যদি আপনাকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে এমন সরাসরি কথা বললে এবং সম্পর্ক ভাঙার সিদ্ধান্ত জানালে তিনি নিজেকে সংশোধন করে নেবেন এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে স্ত্রীকে আর অপমান করার চেষ্টা করবেন না। তাঁকে বুঝতে হবে যে স্ত্রী মানে জীবন সঙ্গিনী, কেবল চামড়া আর মাংসের একটা শরীর না!
নিজের মানসিক অবস্থা ঠিক করতে আপনি একজন কাউন্সিলারের হেল্প নিতে পারেন আপু।
পরামর্শ দিয়েছেন-
রুমানা বৈশাখী
লেখক ও রন্ধনশিল্পী
এডিটর ইন চার্জ (প্রিয় লাইফ-সায়েন্স ও প্রিয় আনসার)
প্রিয়.কম
রুমানা বৈশাখী
লেখক ও রন্ধনশিল্পী
এডিটর ইন চার্জ (প্রিয় লাইফ-সায়েন্স ও প্রিয় আনসার)
প্রিয়.কম
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাউকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থক
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাউকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থক